পেকুয়া প্রতিনিধি:
পেকুয়ায় নিশ্চিত হত্যা প্রচেষ্টা থেকে প্রাণে বেঁচে গেলেন সরকারী চাকুরীজীবি স্বামী-স্ত্রী দম্পতি। গভীর রাতে ভাংচুর করা হয়েছে শিক্ষিকার বসতবাড়ি। এ সময় বাড়িটিতে ব্যাপক তান্ডবসহ লুটপাটও চালানো হয়। ১৪ ফেব্রæয়ারী দিবাগত রাত ২ টার দিকে উপজেলার শিলখালী ইউনিয়নের হেদায়াতাবাদে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পেকুয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তবে শিক্ষিকা ও তার স্বামী দ্রæত সটকে পড়ায় প্রাণনাশ থেকে রক্ষা পেয়েছেন বলে স্থানীয়রা নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, শিলখালী ইউনিয়নের হেদায়াতাবাদে বসতভিটার জায়গা নিয়ে আবদুল মান্নান কুতুবীর স্ত্রী শিলখালী ওয়ারেচীয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা নুসরাত সানজিদা করিম ও স্থানীয় মৃত আসহাব মিয়ার পুত্র নুরুল কবির প্রকাশ নন্না গংদের মধ্যে বিরোধ চলছিল। নুরুল কবির নন্না ও শিক্ষিকা নুসরাত সানজিদা করিম চাচা-ভাতিজী হন। সানজিদার শাশুড় বাড়ি কুতুবদিয়ার উত্তর ধুরুং এলাকায়। স্বামী আবদুল মান্নান কুতুবী সরকারী চাকুরীজীবি ছিলেন। ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স থেকে অবসরে গেছেন। নুসরাত সানজিদা করিম ও আবদুল মান্নান দম্পতি গত কয়েক বছর আগে থেকে শিলখালীতে স্থায়ীভাবে বসবাস করছিলেন। পৈত্রিক বাড়ির নিকটে শিক্ষিকা নুসরাত সানজিদা করিম বসতবাড়ি নির্মাণ করেন। স্থানীয়রা জানান, নুসরাত সানজিদার পিতা মাওলানা বজলুল করিম মেয়েকে পৈত্রিক অংশ থেকে প্রাপ্ত ও খরিদ সুত্রে মালিকানাধীন ভোগ দখলীয় জায়গা হেবামূলে রেজিস্ট্রি দেন। গত ২ বছর ধরে জায়গাটিতে মাটি ভরাটসহ সংষ্কার কাজ চলমান রাখেন। গত ১ মাস আগে ওই স্থানে নুসরাত সানজিদা ও আবদুল মান্নান দম্পতি বসবাসের জন্য সেমিপাকা বাড়ি নির্মাণ করেন। বসতভিটার চতুরপাশে টিনের ঘেরা ও ভিটায় বিভিন্ন প্রজাতির গাছ গাছালি রোপণ করেন। ঘটনার দিন গভীর রাতে একদল দুবৃর্ত্ত শিক্ষিকা নুসরাত সানজিদা করিমের বসতবাড়িতে হানা দেয়। এ সময় বহিরাগত লোকজনসহ দুবৃর্ত্তরা বাড়িতে ঢুকে পড়ে। তারা ইটের দেওয়াল গুড়িয়ে দেয়। টিনের বেড়া কেটে ফেলে। বসতভিটার উভয়দিকে টিনের ঘেরায় তান্ডব চালায়। এমনকি মূল্যবান মালামাল ও নগদ টাকাও নিয়ে যায়। শিক্ষিকা নুসরাত সানজিদা করিম জানান, আমি ও আমার স্বামীসহ আমার দুই বোন বেড়াতে এসেছিল। তান্ডব দেখে আমরা দ্রæত বাড়ি থেকে বের হয়ে বাপের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলাম। না হয় আমরা নিশ্চিত হত্যার টার্গেটে ছিলাম। তারা রাতে ভীতি ও আতংক ছড়ায়। চোখে না দেখলে বিশ্বাস হবে না। এমন নিষ্ঠুরতা আমি জীবনেও দেখেনি। মধ্যযুগীয় বর্বরতাকে হার মানাবে। এখন আমরা বাড়িতে থাকতে ভয় লাগে। সে দিনের তান্ডব এখনো স্মৃতির মানসপটে ভেসে থাকে। তারা কি মানুষ নাকি পশু। একজন পুলিশ অফিসারের ভূমিকাও প্রশ্নবিদ্ধ। প্রয়োজনে মুখ খুলবো কার ভূমিকা কি ছিল। অপরদিকে নুরুল কবির নন্না গংদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে বিষয়টি পারিবারিক দ্বন্ধ। হামলায় তারা জড়িত নন। রাতে তান্ডবের খবরটি জানিয়েছিলেন এমন কিছু নিরীহ ব্যক্তিকে থানায় প্রেরিত লিখিত অভিযোগে আসামীর তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে। পেকুয়া থানার ওসি ওমর হায়দার জানান লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত চলছে।
Leave a Reply