জাহাঙ্গীর আলম কাজল,নাইক্ষ্যংছড়ি,
নাইক্ষ্যংছড়িতে আদালতের নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গ করে প্রতিপক্ষের লোকজন পাকা ধান কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার (৩ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার সদর ইউনিয়নের অলি বকসুর মাঠ নামক গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয়রা জানান, ওই গ্রামের ছৈয়দুল আমিন এর ২.২৫ শতক জমি নিয়ে একই গ্রামের ছৈয়দ নুর,সামশুল আলম,সোন আলী, গংদের সঙ্গে আদালতে মামলা চলছে। গত মাসের ৯ নভেম্বর এই জমির ওপর ১৪৫ ধারা জারি হয়। এর আগে জমিটি ছৈয়দুল আমিন গংরা দখলে ছিল। তারাই ওই জমিতে আমন ধান লাগায় বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
একটি প্রভাবশালী মহলের ইন্ধনে একই এলাকার ছৈয়দ নুর, শামসুল আলম,সাহাজান, সোনা আলী গং সহ আরও কয়েকজন। এদিন সকালে লোকজন নিয়ে এই জমির ধান কাটতে শুরু করেন। বিষয়টি নাইক্ষ্যংছড়ি থানা পুলিশকে জানান ভুক্তভোগী ছৈয়দুল আমিন। পুলিশের তাৎক্ষনিক ঘটনস্থলে এসে ওই জমির পাঁকা ধান কাটার সময় বাঁধা প্রদান করেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত মাসের ৯ নভেম্বর বান্দরবান বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নালিশী ভূমির বর্তমান দখলদারের (ছৈয়দুল আমিন) দখল অক্ষুন্ন রেখে উক্ত ভূমি নিয়ে যাতে কোন শান্তি শৃঙ্খলা ভঙ্গ না ঘটে সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নাইক্ষ্যংছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ-কে নির্দেশ দেন। সে মতে নাইক্ষ্যংছড়ি থানার এএসআই মোঃ মিথুন মন্তল উভয় পক্ষকে আদালতের নির্দেশে ফৌঃ কাঃ বিঃ আইনের ১৪৫ ধারার বিধান মোতোবেক নোটিশ প্রদান করে। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী আগামী ১২/১২ /২০২২ সনে ২য় পক্ষকে বিজ্ঞ আদালতে হাজির হয়ে জবাব প্রদান করার জন্য বলা হয়েছে।
অপরদিকে, মিস সিআর ১৬৬/২০২২ নং মোকদ্দমায় গত ৯ নভেম্বর ১৪৫ ধারা মোতাবেক আদালতের নোটিশ পাওয়ার পর আগামী ১২ ডিসেম্বর জবাবের তারিখ দেয়া সত্বেও মোকদ্দমার দ্বিতীয় পক্ষ ছৈয়দ নুর, সোনা মিয়া গংরা আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে জমির ধান কেটে নিয়েছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন মোকদ্দমার প্রথম পক্ষ ছৈয়দুল আমিন। মামলা থেকে জানা গেছে, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ২৭০ নং নাইক্ষ্যংছড়ি মৌজা হোল্ডিং নং ৫৩৭.জমির পরিমাণ ১.৫০ একার ১ম শ্রেণীর জমি। একই মৌজার হোল্ডিং নং ৩৪৪ জমির পরিমাণ ০.৭৫ একর ১ম শ্রেণীর জমি। এছাড়াও ৩য় শ্রেণীর জমিসহ সর্বমোট ৫.০০ একর জমি ক্রয় সূত্রে প্রকৃত মালিক ছৈয়দুল আমিন। ভুক্তভোগী ছৈয়দুল আমিন বলেন, দীর্ঘদিন যাবৎ তারা আমাদের জমি দখলের চেষ্টা করে আসছিল। তাদের এই অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে আমি আদালতে মামলা দায়ের করেছি। আদালত ১৪৫ ধারা জারি করেছে। কিন্তু ২য় পক্ষ ১৪৫ ধারা ভঙ্গ করে আদালতের আদেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে আমাদের জমির পাঁকা ধান জোরপূর্বক কেটে নিয়ে যাচ্ছে। আমি এর সঠিক বিচার চাই।
ছৈয়দ নুর গং এর নেতৃত্বে মহিলাসহ প্রায় ১০/১২ জন লোক ওই দিন সকালবেলায় এসে আমার রোপিত জমির ধান কাটা শুরু করে দেয়, আমরা বাধা দিলে লোকজন এসে আমাদের হুমকি দিতে থাকে, এই জমি নিয়ে আমরা অনেক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ছৈয়দ নুর, শামসুল আলম, সোনা আলী গংরা বলেন, আমরা ওয়ারিশ সূত্রে মালিক তাই ধান কাটছি। এসময় তারা আমাদের সাথে পরে কথা বলবে বলে জানান । ঘটনা স্থলে আসা থানার এস আই মোঃ ফখরুল বলেন, আমি সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তদন্ত করে ধান কাটার সত্যতা পেয়েছি। দুই পক্ষকেই শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে বলা হয়েছে। এর পরেও না মানলে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা টান্টু সাহার সাথে যোগাযোগ করে সংযোগ না পাওয়ায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
Leave a Reply